ওয়েবসাইট ডিজাইন

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - ডিজিটাল প্রযুক্তি - Digital Technology - নাগরিক সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা | | NCTB BOOK
38
38

বর্তমান সময়ে অনলাইনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে পাবার জন্য ওয়েবসাইট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাহক বা নাগরিকের কোনো তথ্য পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে খোঁজ করে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই ঐ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। যেমন কোনো অভিভাবক তার সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময় বিভিন্ন স্কুলের খোঁজ নেওয়ার জন্য স্কুলগুলোর ওয়েবসাইটে খোঁজ নেয়। এছাড়া অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন নোটিশ এবং বিভিন্ন তথ্যের জন্য ওয়েবসাইটে খোঁজ করে। তাই আগের সেশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা একটি ওয়েবসাইট কীভাবে বানানো যায় তা অনুশীলন করব। তার আগে ওয়েবসাইট তৈরির বিভিন্ন খুঁটিনাটি আমরা একটু জেনে নিই।

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য দুইটি জিনিসের ধারণা থাকতে হবে, প্রথমটি হলো ডোমেইন নাম এবং দ্বিতীয়টি ওয়েব হোস্টিং। ডোমেইন নাম হলো একটি ওয়েবসাইটের নাম যেমন- youtube.com, google. com, Wikipedia.org ইত্যাদি যা দিয়ে সবাই ওয়েবসাইটটিকে চিনে বা কাউকে যদি কোনো ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে বলা হয়, তাহলে ওয়েবসাইটটির ডোমেইন নাম দিয়ে খুঁজলেই সহজে প্রবেশ করা যায়। ডোমেইন নাম ক্লায়েন্ট কম্পিউটারকে ওয়েবসার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে। প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের একটি নির্দিষ্ট আইপি (ইন্টারনেট প্রোটোকল) অ্যাড্রেস (যেমন- 180.102.434.8) থাকে। কিন্তু এধরনের সংখ্যা বা নিউমেরিক ভ্যালু মনে রাখা মানুষের জন্য কষ্টকর বিধায় এই আইপি অ্যাড্রেসকে নির্দিষ্ট ডোমেইন নাম বা ক্যারেক্টার দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। ডোমেইন নাম এর দুইটি অংশ থাকে সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন এবং টপ লেভেল ডোমেইন, যেমন- youtube.com-এর youtube হচ্ছে সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন এবং .com হচ্ছে টপ লেভেল ডোমেইন। তাছাড়াও টপ লেভেল ডোমেইন আরও হতে পারে- .net, .org, .info, .gov, .edu ইত্যাদি। বিভিন্ন দেশের নামেও টপ লেভেল ডোমাইন (ccTLD) রয়েছে, যেমন.bd বাংলাদেশের জন্য: .us যুক্তরাষ্ট্রের এর জন্য; uk যুক্তরাজ্যের জন্য ইত্যাদি। আবার একটি ওয়েবসাইটের ডোমেইন নামের অংশ যে কয়টি থাকতে পারে সেভাবে লেভেল হবে। যেমন- টপ লেভেল, সেকেন্ড লেভেল, থার্ড লেভেল ইত্যাদি (www.example.gov.bd)। এখানে টপ লেভেল ডোমেইন.bd-এর আওতায় সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন হচ্ছে .gov এবং.gov.bd-এর আওতায় থার্ড লেভেল ডোমেইন হলো example.

 

 

চলো নিচের দেওয়া ছকটি আমরা পূরণ করি-

ওয়েসসাইটের

ডোমেইন নাম

সেকেন্ড লেভেল

ডোমেইন

টপ লেভেল ডোমেইন

কান্ট্রি কোড টপ লেভেল

ডোমেইন

www.moedu.gov. 

bd

   
www.nubd.info   

www.microsoft. 

com

   
www.oecd.org   
www.gov.uk   
www.du.ac.bd   

ছক-৩.৬: বিভিন্ন ধরনের ডোমেইন চিহ্নিতকরণ

এবার আমরা জানব ওয়েব হোস্টিং কী-

একটি ওয়েবসাইটে নাম ছাড়াও বিভিন্ন ডকুমেন্ট থাকে, যেমন-ছবি, বিভিন্ন তথ্য, ভিডিও ইত্যাদি। এছাড়া ওয়েবসাইটটি সচল রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের কোডিং করা হয়। এই ডকুমেন্টগুলো এবং কোডগুলো নিশ্চয়ই কোথাও সংরক্ষণ করে রাখতে হয়েছে। কোনো এজেন্সি অথবা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই ডকুমেন্ট এবং কোডগুলো সংরক্ষণ, সংগ্রহ, বিতরণ এবং মেরামতের যে অনলাইনভিত্তিক সেবা দিয়ে থাকে তাই ওয়েব হোস্টিং নামে পরিচিত। এই ওয়েব হোস্টিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন এজেন্সি অথবা প্রতিষ্ঠান কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং ইন্টারনেটে হোস্ট করার সুযোগ করে দেয়। অনেক বড় পরিসরের ওয়েবসাইট তৈরি ও হোস্ট করার জন্য বিভিন্ন এজেন্সি থেকে ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস ক্রয় করে নিতে হয়। তবে বিভিন্ন ওয়েব হোস্টিং এজেন্সি অথবা প্রতিষ্ঠান প্রারম্ভিক স্তরের ওয়েবসাইট তৈরি ও অল্প পরিমাণের ডকুমেন্ট হোস্টিং করার জন্য বিনামূল্যে সেবা দিয়ে থাকে। নিচের দুটি ছবিতে যে ডকুমেন্টগুলো ওয়েব হোস্টিং-এ সংগ্রহ করে এবং যে ধাপে ওয়েব হোস্টিং-এর মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইট প্রস্তুত হয়ে ব্যবহারকারী ডিভাইস স্ক্রিনে আসে তা দেখানো হয়েছে।

নিচের ছবিটিতে ওয়েব হোস্টিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন ডিভাইসের সম্পর্কগুলো নিচের দেওয়া ছকের ভিতরে লিখি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিভিন্ন ওয়েব হোস্টিং এজেন্সি তাদের ওয়েবসাইট থেকে ওয়েবসাইট বানানোর ইন্টারফেস প্রদান করে। এই ইন্টারফেসগুলোতে কেউ কোডিং-এর ধারণা ছাড়াও খুবই সহজে কিছু টুল ব্যবহার করেই একটি ওয়েবসাইট বানাতে পারে। এই সাইটগুলোতে তৈরিকৃত ওয়েবসাইট হোস্টিং করার জন্য বিনামূল্যে কিছু জায়গা দিয়ে থাকে, যেখানে অল্প জায়গা নেয়া ওয়েবসাইট বানানো ও হোস্টিং করার অনুশীলন করা যায়। Google Sites, WordPress, Wix, Squarespace, Weebly, GoDaddy এ রকম কিছু প্ল্যাটফর্ম যারা ওয়েবসাইট তৈরি ও হোস্টিং করার সুযোগ দেয়। এবার আমরা এই সকল ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সুবিধাসমূহ সম্পর্কে জেনে নিই।

নাম

লোগো

সুবিধা

Google Sites

গুগলের এই ফ্রি টুলটির সাহায্যে কোনো রকম কোডিং স্কিল ছাড়াই সহজ ও দৃষ্টিনন্দন ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। এখানে অনেক ব্যবহারকারীবান্ধব ইন্টারফেস। পাওয়া যায়, যেখানে অনেক টেমপ্লেটস, থিমস এবং বিকল্প থাকে যার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ডিজাইন করা যায়। এখানে খুব সহজেই গুগলের অন্যান্য সার্ভিসও (যেমন-গুগল ড্রাইভ, গুগল ম্যাপ ইতাদি) সংযুক্ত করা যায়। যদিও এটি বিনামূল্যে। ওয়েবসাইট করার সুযোগ করে দেয়, তারপরও এটিতে বিভিন্ন আধুনিক থিম ব্যবহার করে অনেক প্রফেশনাল করা সম্ভব। এর ওয়েব অ্যাড্রেসটি হলো: http://sites. google.com

WordPress

এটি একটি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম যা দিয়ে অল্প। টেকনিক্যাল জ্ঞান দিয়েও এখানে কাজ করা সম্ভব। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সার, ফরচুন 500 কোম্পানী এবং বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইট তৈরিতে এটি ব্যবহার করে। এর দুইটি সাইট রয়েছে- ফ্রি ভার্সনের জন্য wordpress.com এবং পেইড ভার্সনের জন্য wordpress.org ওয়েব অ্যাড্রেস। এটির ফ্রি ভার্সন দিয়ে একাধিক পেইজে কাজ করা যায় এবং পেইড ভার্সন আরও অত্যাধুনিক ফিচার নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে এখানে কাজ শুরু করা সম্ভব।

Wix

Wix এর ওয়েব অ্যাড্রেসটি হলো: www.wix. com, এটি আরেকটি ফ্রি ওয়েবসাইট বিল্ডার, এছাড়া এর বিভিন্ন প্রিমিয়াম ও ই-কমার্স প্ল্যান আছে। এখানে ফ্রি লেভেল-এ ফাংশনগুলো খুবই লিমিটেড, তবে পেইড ভার্সনে 500'র মতো টেমপ্লেট ব্যবহার করার সুযোগ দেয়। এর ড়েগ এন্ড ড্রপ ফিচার ব্যবহার করে প্রারম্ভিক ব্যবহারকারীরা কারিগরি বিশেষ জ্ঞান ছাড়াও কাজ করতে পারবে। ভিজিটর ট্র্যাকিং-এর জন্য এটি কোডিংও প্রকাশ করে থাকে।

Squarespace

দৃষ্টিনন্দন ও প্রফেশনাল লুকিং টেমপ্লেট-এর জন্য এটি একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট টুল। যদিও এটি বিনামূল্যে হোস্টিং করার সার্ভিস দেয় না কিন্তু ক্রয়কৃত সার্ভিসের ফিচারগুলো দেখার জন্য ১৪ দিনের ফ্রি ট্রায়াল করার সুযোগ দেয়। নিজের যে কোনো ইমেইল একাউন্ট, জিমেইল বা ফেসবুক একাউন্ট দিয়ে সাইন আপ করা যায়। ড্যাগ এন্ড ড্রপ পদ্ধতিতে ওয়াবসাইট তৈরি করা যায়। এটি একটি ওয়েবসাইটের বিভিন্ন ডেটার অনেক বিস্তারিত বিশ্লেষণ দেয়, এর ফলে ওয়েবসাইটকে জনপ্রিয় করার জন্য অপটিমাইজ করা যায়। এর ওয়েব অ্যাড্রেসটি হলো: www.square- space.com

Weebly

ব্যক্তিগত, ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ই-কমার্স সাইটের ওয়েবসাইট তৈরির জন্য এখানে ফ্রি এবং পেইড বিভিন্ন প্ল্যান আছে। কোনো রকম ওয়েব ডিজাইনের অভিজ্ঞতা ছাড়াই এই এখানে সহযে ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ পদ্ধতিতে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। এর ওয়েব অ্যাড্রেস হলোঃ www.weebly.com

GoDaddy
এটি প্রাথমিকভাবে ডোমেইন রেজিস্টার এবং হোস্টিং প্রোভাইডার হিসেবে পরিচিত থাকলেও এটি ব্যবহার বান্ধব ওয়েবসাইট তৈরির টুল। এটির কোনো ফ্রি প্ল্যান নাই, তবে সাবস্ক্রিপশন করার পূর্বে এর ফিচারসমূহ এক্সপ্লোর করার জন্য এক মাসের ট্রায়াল করার সুযোগ দেয়। শুরুর দিকে কোনো ডেভেলপারের কোনো রকম টেকনিক্যাল দক্ষতা ছাড়াই এখানে ড়েগ এন্ড ড্রপ পদ্ধতি ব্যবহার করে কাজ করতে পারে। এটির ওয়েব অ্যাড্রেস হলো: www.godaddy.com

তথ্য ছক-৩.৫: মুক্ত উৎসের প্ল্যাটফর্মসমূহ

এবার আমরা কোনো ইন্টারনেট ব্রাউজারের ওয়েব অ্যাড্রেসগুলো লিখে সার্চ করব। সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটগুলো এক্সপ্লোর করে যে কোনো ওয়েবসাইট সম্পর্কে নিচের ছকে লিখব।

ওয়েবসাইটের নাম
ওয়েব অ্যাড্রেস

ওয়েবসাইটটিতে কী কী তথ্য আছে:

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছক-৩.৮: একটি ওয়েবসাইটের কনটেন্ট তালিকা

Content added || updated By
Promotion